নভেম্বরের শেষ থেকেই এবার জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। জেলার সব বাড়িতেই লেপ-কম্বল নেমেছে আলমারি থেকে। দুপুর গড়াতেই নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। প্রচুর মানুষ আছেন যাঁরা শীত পড়লেই স্নান করা বন্ধ করে দেন। বাথরুমে ঢুকতে হবে শুনলেই যেন গায়ে জ্বর আসে। স্নান না করেই সপ্তাহে দিন তিনেক অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তাঁরা। গায়ের দুর্গন্ধ ঢাকতে প্রচুর পরিমাণে পারফিউম স্প্রে করলেও যত সমস্যা কিন্তু তেল-সাবানে। আবার উল্টোটাও অনেকে করেন। সারা বছরের মতো শীতেও গায়ে ঠান্ডা জল ঢেলে স্নান করেন। তবে শীতে গরম জলে স্নান করার অভ্যেস থাকে সিংহভাগের। বিশেষত যাঁদের শরীরে কোনও ব্যথা থাকে। তাঁদের প্রতিদিন হালকা গরম জলে স্নান করাই ভালো। কিন্তু প্রতিদিন গরম জলে স্নান করলে শরীর গরম হয়ে যায়। এছাড়াও চুল, ত্বকের ক্ষতি হয়। তবে শীতেও প্রতিদিন সাবান মেখে স্নান করতেই হবে। প্রয়োজন মত তেল বা ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। পছন্দমতো ঠান্ডা বা গরমজল বেছে নিন। কিন্তু প্রতিদিন আবার গরম জলে স্নান করা চলবে না। দেখে নিন কীভাবে শীতেও থাকবেন ফ্রেশ। প্রতিদিন স্নান করতে হবেশীত মানেই স্নানকে ভয় নয়। স্নান নিয়মিত না করলে শীতে ঠান্ডা লাগা, ত্বকের সমস্যা এসব থাকবেই। তাই সুস্থ থাকতেই পরিষ্কার থাকতে হবে। এছাড়াও শীতে একটু বেশিই খাওয়া দাওয়া হয়। খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে নিয়মিত স্নান না করলেই পেট গরম হবে। আর শীতকালে আমাদের শরীরে বেশি জামাকাপড় থাকে। ফলে শরীরও গরম থাকে। আর তাই স্নান না করে গরম জামা পরে ঘুমোলে হৃদরোগের সম্ভাবনাও থেকে যায়। জলের তাপমাত্রাখুব ঠান্ডাও নয় আবার খুব গরমও নয়। যে তাপমাত্রায় গায়ে জল ঢাললে আরাম হবে সেই রকম জল নিন। যদি প্রতিদিন ঠান্ডা জলেই স্নান করার অভ্যেস থাকে তাহলে তাই করুন। একদম গরম জল গায়ে ঢালবেন না। হট ওয়াটার আর ওয়ার্ম ওয়াটারের মধ্যে কিন্তু ফারাক রয়েছে। প্রতিদিন গায়ে গরম জল ঢাললে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের জল ধরে রাখার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। বডি ওয়াশসাবান আমাদের শরীরকে বেশি শুষ্ক করে দেয়, কিন্তু বডি ওয়াশ শরীরকে পরিষ্কার করার পাশাপাশি আর্দ্রতাও বজায় রাখে। তবে লোভাতে বডিওয়াশ নিয়ে গা-হাত-পা পরিষ্কার করুন। অ্যালকোহল যুক্ত কোনও বডি ওয়াশ ব্যবহার করবেন না। শীতের উপযোগী প্রচুর বডিওয়াশ পাওয়া যায়য়। সেগুলোই দেখে কিনুন। তবে বডি ওয়াশ লাগানোর আগে কিন্তু স্ক্রাবিং করে নিতে ভুলবেন না। টাওয়াল দিয়ে গা মুছতে হবেভেজা গায়েই বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসবেন না। নরম টাওয়াল দিয়ে ভালো করে গা মুছতে হবে। ফ্যানের হাওয়ায় গা শুকনো যেমন ক্ষতিকারক, তেমনই ত্বকের জন্যও খারাপ। কারণ স্নান করলে গা ঠান্ডা থাকে। বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে তা খাপ খায় না। তাই শুকনো করে মুছে তবেই ঘরে আসুন। তেল মাখুনআগেকার দিনে শীতকাল মানেই উঠোনে বসে সরষের তেল অথবা নারকেল তেল মাখার রেওয়াজ ছিল। ভালো করে রোদে বসে তেল মেখে তবেই সবাই স্নান করতেন। কিন্তু এখন তা কেউই করেন না। আর এভাবে বসে তেল মাখার সুযোগ নেই। তাই লাস্ট দুমগ জল ঢালা যখন বাকি থাকবে তখন দু ফোঁটা তেল মিশিয়ে নিন। অথবা যদি সাবান মাখার পর তেল মাখেন তখন দু মিনিট ম্যাসেজ করে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। ময়েশ্চারাইজার লাগানশুকনো করে গা মুছে তবেই ময়েশ্চারাইজার লাগান। পিঠে, হাতে, পায়ে ভালো করে লাগাবেন। কোনও ভাবেই যাতে খসখসে ভাব না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ময়েশ্চারাইজার মেখে ভালো করে শীতের জামা পরে নিন। এতে ত্বক পরিষ্কার থাকবে আর ভালোও থাকবে। সেই সঙ্গে বজায় থাকবে আর্দ্রতা।