দিল্লির সাংবাদিক বৈঠকে থাকা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি সম্পর্কে জানুন।
৩৫ বছরের সোফিয়া কুরেশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাধিক যুগান্তকারী সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সালে প্রথম মহিলা হিসাবে তিনি বিদেশি সামরিক মহড়ার নেতৃত্ব দেন।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। বুধবার সকালে ভারতীয় সেনার এই সংক্রান্ত সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। কী ভাবে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করে করে ধ্বংস করা হয়েছে, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সোফিয়াও। ভারতীয় সেনার গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তিনি।
ভারতীয় সেনার সামরিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক্স অভিযান সহায়ক শাখা সিগন্যাল কর্পসের অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক সোফিয়া। ৩৫ বছরের এই অফিসার সেনাবাহিনীর একাধিক যুগান্তকারী সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সালে তিনি প্রথম খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। ওই বছর ১৮টি দেশের সামনে ভারতের সামরিক মহড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সোফিয়া। প্রথম মহিলা হিসাবে এই কৃতিত্ব তিনি অর্জন করেন। সে সময়ে সোফিয়া ছিলেন লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল। পুণের ওই সামরিক মহড়া ছিল ভারতে আয়োজিত সবচেয়ে বড় বিদেশি সামরিক মহড়া। ২ থেকে ৮ মার্চের মহড়ায় যোগ দিয়েছিল জাপান, চিন, আমেরিকা, রাশিয়ার মতো দেশ। আর কোনও দেশের মহড়ার নেতৃত্বে মহিলা ছিলেন না।
৪০ সদস্যের ভারতীয় সেনাদলকে মহড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সোফিয়া। মহড়ার লক্ষ্য ছিল শান্তিরক্ষার অভিযান। এই মহড়ায় নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে তিনি নেতৃত্ব অর্জন করেছিলেন। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সম্মানজনক এই কাজের জন্য দেশের বেশ কয়েক জন শান্তিরক্ষী প্রশিক্ষকের মধ্যে থেকে সোফিয়াকে নির্বাচিত করা হয়েছিল।’’ শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত কাজে সোফিয়ার অভিজ্ঞতাও অনেক। ২০০৬ সালে কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা অভিযানে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। সোফিয়ার পরিবারেও সেনাবাহিনীর ইতিহাস রয়েছে। তাঁর ঠাকুরদা ভারতীয় সেনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেনার পরিবারেই তাঁর বিয়ে হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, পর্যটকদের ধর্মপরিচয় জিজ্ঞাসা করে বেছে বেছে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। তার জবাবে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কিছু অংশে প্রত্যাঘাত করা হয়। ভারতীয় সেনার দাবি, পাকিস্তানের ন’টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও সাধারণ নাগরিকের ক্ষতি করা হয়নি। পাকিস্তান আট জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নিয়েছে। সীমান্তে গোলাগুলি চলছে। বুধবার সকালে এই ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সেনার তরফে যে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়েছিল, তাতে ছিলেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। তাঁর সঙ্গেই দুই মহিলা অফিসার ছিলেন, যাঁদের মধ্যে অন্যতম কর্নেল সোফিয়া। কী ভাবে কোথায় কোথায় হামলা চালানো হয়েছে, তিনি সাংবাদিকদের সামনে তার ব্যাখ্যা দি
য়েছেন।