গ্রামের ষোল আনার টাকা খরচ নিয়ে বিবাদ! তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত তিন।
সারা বাংলা ডট ইন ডেস্ক: ষোল আনার টাকা কোথায় খরচ হবে তা নিয়ে বিবাদে অশান্তি ছড়াল বুদবুদের দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকোড়া গ্রামে। সোমবার রাতের এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতির বাড়ির লোকজন। অভিযুক্ত দলেরই আর এক গোষ্ঠী। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে চলে আসেন বুদবুদ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। মঙ্গলবার সকালেও গ্রামে পুলিশ পিকেট রাখা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী বিজেপি। যদিও তৃণমূলের দাবি, এটা পারিবারিক বিবাদ। রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনা সূত্রপাত বেশ কয়েকদিন আগে। এই গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য গ্রাম ষোল আনার পক্ষ থেকে একটি তহবিল করা হয়। যেখানে গ্রামের মানুষ নিজেদের সাধ্যমত টাকা দেন। গ্রামে কোনও পরিবারের কারও মৃত্যু হলে সেই তহবিল থেকে খরচ করা হয়। সেই তহবিলকে ঘিরেই কয়েক দিন ধরে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল গ্রামে। তৃণমূলের বুথ সভাপতি শেখ আনারুল ও ওই গ্রামেরই এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ঝামেলাও হয়। তখনকার মতো ঝামেলা মিটে যায়। শেখ আনারুলের পরিবারের অভিযোগ, সোমবার রাতে আচমকা গ্রামেরই কয়েকজন বাসিন্দা শেখ আনারুলের ভাইপো সহ এক আত্মীয়ের ওপর লাঠি, রড নিয়ে চড়াও হয়। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁদের। ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরে সেখান থেকে চিকিৎসকেরা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করে। অধিকাংশের মাথায় চোট লেগেছে।
মঙ্গলবার শেখ আনারুলের স্ত্রী আসমা বিবি সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, তাঁর স্বামী গ্রাম ষোল আনার টাকা অন্যত্র ব্যবহার যাতে না করা হয় তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই থেকেই গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা তাঁর স্বামীকে সহ্য করতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমার স্বামীকে কাছে না পেয়ে পরিবারের লোকজনদের মারধর করা হয়েছে। এমনকি বাড়ির মহিলাদেরও কটুক্তি করা হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। শেখ আনারুলের মেয়ে কেসমা খাতুন অভিযোগ করেন, বিনা প্ররোচনায় গ্রামের কয়েকজন দুষ্কৃতী তাদের পরিবারের লোকজনকে মারধর করেছে। এমনকি বাড়ির মহিলাদেরও কটুক্তি করতে ছাড়ছে না। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে এখন কোনও পুরুষ নেই। আমরা চরম আতঙ্কে রয়েছি। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, যাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করা হচ্ছে তারাও এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। এই ঘটনা নিয়ে বিরোধী বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা সৌমেন পাত্র বলেন, শাসক দলের বুথ সভাপতি নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? যদিও বিরোধীদের অভিযোগ মানতে চাইনি তৃণমূল। দেবশালা অঞ্চল সভাপতি আজম মোল্লা বলেন, এটা সম্পূর্ণ পারিবারিক বিবাদ। এর সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই। বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।











