সারা বাংলা ডেস্ক: বহু প্রতিক্ষিত কেদারনাথ যাত্রা শুরু হয়েছে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ কেদারনাথের পৌঁছেছেন। তবে যাত্রা শুরু হতেই এক ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে কেদারনাথ যাত্রার ওপর। এই কেদারনাথ যাত্রা অনেকটাই নির্ভর করে ঘোড়া বা খচ্চরের উপর। যাত্রী থেকে সামগ্রী পরিবহন সবেতেই ঘোড়া বা খচ্চরের বিশাল অবদান রয়েছে কেদারনাথ যাত্রাতে। এবার সেই ঘোড়া বা খচ্চরেই দেখা দিল অজানা রোগ। যার ফলে যাত্রা শুরু হতেই ঘোড়া বা খচ্চরের মৃত্যু মিছিল শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, কেদার যাত্রা করতে গেলে বহু মানুষ ঘোড়া বা খচ্চরে পিঠে চেপে দুর্গম রাস্তা পার হন। আবার পাহাড়ের উপরে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রি তোলার ক্ষেত্রে ঘোড়া বা খচ্চরের উপর নির্ভর করেন ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু গত দুদিনে ১৪টি ঘোড়া-খচ্চরের সন্দেহজনক অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিবেচনা করে উত্তরাখণ্ড সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই যাত্রাপথে ঘোড়া-খচ্চর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
রবিবার ৮ টি এবং সোমবার ৬ টি ঘোড়া ও খচ্চরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এলাকার বহু মানুষের রুজিরুটি নির্ভর করে এই পশুদের উপর। এই ঘটনার পর পশুপালন বিভাগ সতর্ক হয়ে উঠেছে। পশুপালন বিভাগের সচিব ডাঃ বি.ভি.আর.সি. পুরুষোত্তম নিজেই রুদ্রপ্রয়াগে গিয়ে পরিস্থিতি স্বচক্ষে যাচাই করেন। তিনি জানান, পশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া রোগ প্রতিরোধের জন্য সতর্কতামূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং হরিয়ানার হিসার থেকে একটি বিশেষ দল কেদারনাথের পাঠানো হচ্ছে মঙ্গলবার। এতগুলি পশুর মৃত্যুর তদন্ত করবে ওই দল। পাশাপাশি রোগের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ডাঃ পুরুষোত্তম জানান, প্রাথমিকভাবে এটি কোনও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকতে পারে। তবে, তদন্তের পরেই সঠিক কারণ স্পষ্ট হবে।
পশুপালন বিভাগের সচিব ডাঃ বি.ভি.আর.সি. পুরুষোত্তম জানান, এর আগে এপ্রিল মাসে ঘোড়া ও খচ্চরদের মধ্যে ইকুইন ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। সে কথা মাথায় রেখে ৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে মোট ১৬,০০০ ঘোড়া-খচ্চরের স্ক্রিনিং করা হয়, যার মধ্যে ১৫২টি পশুর সেরো স্যাম্পলিং পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল। তবে, আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় সবগুলো রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে।
তবে সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, কেদারনাথ যাত্রা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে না। তবে যাত্রাপথে পাঠানো প্রতিটি ঘোড়া-খচ্চরের শারীরিক অবস্থা আগে পরীক্ষা করা হবে। যেসব পশুর রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, শুধুমাত্র তাদেরকেই তীর্থযাত্রীদের বহন করার অনুমতি দেওয়া হবে।
সচিব জানিয়েছেন, যদি কোনও পশুর নাক দিয়ে জল পড়তে দেখা যায়, তাহলে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট আসা পর্যন্ত তাকে কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেই তাকে পাঠানো হবে।