বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র ও মাকে মিনিবাসে উঠতে না দেওয়ার অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে দুঃখ প্রকাশ।
সারা বাংলা ডট ইন ডেস্ক: এক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র এবং তার মাকে মিনিবাসে উঠতে না দেওয়ার অভিযোগ। বিষয়টি জানার পরেই প্রশাসনের তরফে ক্ষমা চাওয়া হল ওই হোমে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে আশ্বাস প্রশাসনের।
দুর্গাপুরে দয়ানন্দ এলাকার একটি বেসরকারি হোমে পড়াশোনা করে পানাগড়ের এক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু। সোমবার ওই শিশুকে নিয়ে তার মা দুর্গাপুর যাওয়ার জন্য পানাগড় বাজারে বাস ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। সে সময় একটি মিনিবাস তাঁদেরকে দেখে দাঁড়ালেও বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রকে দেখে বাসে ওঠানো হয়নি তাদের। ফলে নিজের শিশুকে নিয়ে সমস্যায় পড়ে যান মহিলা। পরে কোনওভাবে তিনি দুর্গাপুরের হোমে এসে আধিকারিকদের পুরো বিষয়টি জানান। দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ যায়। বিষয়টি জানানো হয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকেও। অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্ত নামে মহকুমা প্রশাসন। ঘটনা সত্যতা জানার পরই মিনিবাস সংগঠনের কাছে কেন দুর্ব্যবহার করা হয়েছে ওই মহিলার সাথে তা জানতে চাওয়া হয়। মিনিবাস সংগঠনের তরফে ভুল স্বীকার করা হয়। এরপরই বুধবার আঞ্চলিক পরিবহন দফতরের আধিকারিক দেবাশীষ ঘোষ, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় এবং মিনিবাস মালিক এবং সংগঠনের কর্মকর্তারা দয়ানন্দ রোডের ওই বেসরকারি হোমে যান। সেখানে গিয়ে বিশেষভাবে সক্ষম ওই ছাত্রের মায়ের কাছে এবং হোমের আধিকারিকদের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ওই বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রের মা বলেন, “সোমবার আমাকে এবং ছেলেকে বাসে উঠতে দেওয়া হয়নি। খুব খারাপ লেগেছিল। বিষয়টি আমি স্যারদের জানিয়েছিলাম। উনারা ব্যবস্থা নেওয়াতে প্রশাসনের আধিকারিকেরা এবং মিনিবাস সংগঠনের লোকজন এসেছিলেন। তাঁরা ক্ষমা চেয়েছেন। কথা দিয়েছেন ভবিষ্যতে কারও সাথেই এমন ঘটনা ঘটবে না”। জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা খুবই লজ্জিত। বিষয়টি জানার পরই আমরা হোমে গিয়েছিলাম। উনাদের আশ্বস্ত করেছি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না।”
ওই বেসরকারি হোমের সম্পাদক গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের এখানে প্রতিদিন দুর্গাপুর, পাণ্ডবেশ্বর, কাঁকসার মতো এলাকা থেকে অনেকেই আসেন। পানাগড়ের ওই ছাত্রকে এবং তার মাকে বাসে উঠতে দেওয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। আজ উনারা এসেছিলেন।” বিষয়টি নিয়ে মিনিবাস প্যাসেঞ্জার কেরিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক প্রবীর কুমার চক্রবর্তী বলেন, “আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। খুবই একটা বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের। মহিলার কাছে গিয়ে আমরা সবাই মিলে ক্ষমা চেয়েছি। সমস্ত বাস কর্মীদের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে হলে বরদাস্ত করা হবে না। কড়া আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”