ক্ষমা চাইলেন বিজেপি মন্ত্রী
সারা বাংলা ডেস্ক: কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে অসম্মানজনক মন্তব্য করার ঘটনায় ফের ক্ষমা চাইলেন বিজেপি বিধায়ক তথা মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ। তিনি জানান, ভাষাগত ত্রুটির কারণেই ওই মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। কারও অনুভূতিকে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। ৪৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে ওই মন্তব্যের জন্য ভারতীয় সেনা, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং গোটা দেশবাসীর কাছে ফের ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি পরোক্ষভাবে কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে সন্ত্রাসের বোন বলে উল্লেখ করেন। এরপরই গোটা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
বিজেপির ওই বিধায়ক গত ১২ মে ইন্দোরের রাইকুন্ডা গ্রামে এক জনসভায় অপারেশন সিন্দুরের ব্যাপারে বলতে গিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “মোদিজি সমাজের জন্য সংগ্রাম করছেন। যারা আমাদের মেয়েদের বিধবা করেছিলেন, আমরা তাদের একটি বোনকে তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলাম।” এরপর তিনি বলেন, “এখন, মোদিজিও একই কাজ করতে পারতেন না। তাই তিনি তাদের সমাজের একজন বোনকে পাঠিয়েছিলেন, যাতে তুমি যদি আমাদের বোনদের বিধবা করো, তাহলে তোমার একজন বোন এসে তোমার পোশাক খুলে দেবে।” বিধায়কের এই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা হয়। কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে এমন মন্তব্যের পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি ওঠে কঠিন শাস্তির। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটওয়ারি শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর বরখাস্তের দাবিও জানিয়েছেন। হাইকোর্ট ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশকে চার ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত মন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দেয়। সেই মতো আবেদন করেন তিনি। শীর্ষ আদালত অবশ্য মধ্যপ্রদেশের এই মন্ত্রীর ক্ষমা-আর্জি খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট মন্ত্রীকে তিরস্কার করে। পাশাপাশি ক্ষমা চাওয়ার এই ঘটনাকে “কুমিরের কান্না” বলে অভিহিত করেছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং এন কোটিশ্বর সিং-এর বেঞ্চ বিজয় শাহকে বলেন, “আপনার ক্ষমা চাওয়ার দরকার নেই। আপনি একজন জনপ্রতিনিধি, একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। আপনার কথার ওজন রয়েছে। আপনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহারে কোনওমতে আটকেছেন। আপনি নোংরা ভাষা ব্যবহার করতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু আপনি একটি শব্দও খুঁজে না পাওয়ায় থেমে গিয়েছেন।”
তবে এই ঘটনার পর সতর্ক বিজেপি। কোনও সভা থেকে কোনও ধরণের বিতর্কিত মন্তব্য করা যাবে না বলে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। জুন মাসে ভোপালে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ শিবির করা হবে। বিজেপির মিডিয়া বিভাগের প্রেসিডেন্ট আশিস আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই ধরণের প্রশিক্ষণ শিবির এবার থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তারা আয়োজন করবেন। সেখানে স্থানীয় স্তরের নেতা থেকে শুরু করে দলের উচ্চপদে থাকা নেতারাও যোগ দেবেন।